সমুদ্রে পড়ে গেলে জীবন বাঁচানো কঠিন। স্কটল্যান্ডে সামুদ্রিক নৌ দুর্ঘটনা এখন নিয়মিত ঘটনা। এ ধরনের দুর্ঘটনায় অনেকেই প্রাণ হারান। সমুদ্র এলাকায় মানুষের প্রাণ রক্ষায় তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন নৌযান তৈরি করেছে স্কটিশ কোম্পানি জেলিম। প্রতিষ্ঠানটি এমন এক ধরনের জীবনরক্ষাকারী নৌযান তৈরি করেছে, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো ডুবন্ত মানুষকে রক্ষা করতে পারে। এ ছাড়া এ নৌযান চালাতে কোনো চালকের প্রয়োজন পড়ে না। প্রতিষ্ঠানটি তাদের এ নৌযানের নাম দিয়েছে ‘গার্ডিয়ান’।
জেলিমের প্রতিষ্ঠাতার নাম স্যাম মেয়াল। তাঁর নাবিক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি বলেন, উপকূলে এখন যেসব প্রাণ রক্ষাকারী প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়, তা চার থেকে পাঁচ দশক পুরোনো। তিনি ২২ বছর বয়সে ২০১৭ সালে জেলিম প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর এই প্রতিষ্ঠান এখন মার্কিন কোস্টগার্ড ও উপকূলের বিভিন্ন জ্বালানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য হচ্ছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন নিখুঁত প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা। মেয়ালের আশা, এতে দ্রুত কাউকে উদ্ধার করা যাবে এবং উদ্ধারকারীদের জন্যও এটি নিরাপদ যান হিসেবে কাজ করবে।
মেয়াল বলেন, স্বয়ংক্রিয় এই উদ্ধারযান ব্যবহার করা হলে সমুদ্রে উদ্ধারকর্মীদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাউকে উদ্ধারে নামতে হবে না। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন একটি মানদণ্ড ঠিক করা সম্ভব হবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নতির সঙ্গে নানা ক্ষেত্রে এর ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। স্বয়ংক্রিয় গাড়ি এখনো বাজারে আসেনি। কিন্তু স্বয়ংক্রিয় নৌকার ব্যবহার বেড়েছে। ইতিমধ্যে নেদারল্যান্ডসে বৈদ্যুতিক ও স্বয়ংক্রিয় রোবট নৌকার ব্যবহার শুরু হয়েছে। যাত্রী আনা–নেওয়ার পাশাপাশি সেখানকার খালে আবর্জনা পরিষ্কার করতে স্বয়ংক্রিয় নৌকা ব্যবহার করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ও আমস্টারডাম ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড মেট্রোপলিটন সলিউশনস এ ধরনের নৌকা তৈরি করেছে। এ ধরনের নৌকা একত্র করে ভাসমান সেতুও তৈরি করা সম্ভব।
জেলিমের তৈরি ‘গার্ডিয়ান’ নামের এই জীবনরক্ষাকারী নৌকায় যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন বস্তু শনাক্তকারী পদ্ধতি রয়েছে, তা দ্রুত ডুবে যাওয়া কোনো ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারে। এরপর এর ‘সুইফট’ নামের কনভেয়ার বেল্টের সাহায্যে ডুবন্ত ব্যক্তিকে পানি থেকে তুলে আনতে পারে। উদ্ধার করার পর এই নৌকা থেকে দ্রুত সাহায্য চেয়ে যোগাযোগ করার সুবিধাও রয়েছে।