সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের নেতাদের এসব অপপ্রচারের তথ্যভিত্তিক জবাব তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, উপদেষ্টা পরিষদ ও জাতীয় কমিটির যৌথ সভায় এই নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা পরে এ তথ্য জানান। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্য উদ্ধৃত করে বৈঠকে উপস্থিত দুজন নেতা জানান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সবাইকে সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দলের সভাপতি। ওই নেতারা আরও বলেন, বৈঠকে দলীয় সভাপতিকে আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে ইনশা আল্লাহ। সরকার অনেক কাজ করেছে। এর সুফল জনগণ পাচ্ছে। জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যৌথ সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোনো নেতা বক্তব্য দেননি। জেলা থেকে আসা জাতীয় কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে প্রায় ২০ জন বক্তৃতা করেন। সবার বক্তব্যের মূল কথা হচ্ছে, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংগঠনের তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে হবে। তাঁরা দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে দলীয় সভাপতির নির্দেশনা চান। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতাদের আরও বেশি সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ জানান। বৈঠক সূত্র জানায়, উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য বলেছেন, লবিস্ট নিয়োগ করে সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র চলছে, তা মোকাবিলায় দূতাবাসগুলোকে আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে। গণভবনে শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, উপদেষ্টা পরিষদ ও জাতীয় কমিটির যৌথ সভায় উপস্থিত দলের নেতাদের একাংশ গণভবনে শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, উপদেষ্টা পরিষদ ও জাতীয় কমিটির যৌথ সভায় উপস্থিত দলের নেতাদের একাংশছবি: পিআইডি জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সবাইকে জবাব দিতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির আন্দোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করছে। অথচ ফখরুদ্দীন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হওয়া ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা ২৯টি আসন পেয়েছিল। আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে। সব সময় সেটার শিকার হয়েছে আওয়ামী লীগ। তাদের ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপির আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করলে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। কিন্তু তারা ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মতো অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও করলে কঠোরভাবে জবাব দেওয়া হবে। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সব দ্বন্দ্ব-কোন্দল মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। তিনি নেতাদের বলেন, দ্বন্দ্ব ভুলে যেতে হবে। ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি বিএনপির শাসনামলের চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দেয়, তা বাস্তবায়ন করে, সেটা বোঝাতে হবে। শেখ হাসিনা জাতীয় কমিটির নেতাদের জেলায় জেলায় সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করতে নির্দেশনা দেন। একই সঙ্গে তাঁদের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ প্রয়োজনে দলীয় সভাপতির কাছে প্রতিবেদন দিতে বলেন। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, দুপুরের দিকে উপস্থিত নেতাদের গণভবনের বাগানে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেবিলে টেবিলে গিয়ে কথা বলেন এবং হাস্যরস করেন। কারও কারও পাতে খাবার তুলে দেন। দুপুরের বিরতির পর আবার বৈঠক শুরু হয়ে সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে যৌথ সভা শেষ হয়।
previous post
সম্পর্কিত খবর
- মন্তব্য
- ফেসবুক কমেন্টস