২১ বছর বয়স। ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে, তা নয়। ম্যাথু ফর্ড লিস্ট এ ম্যাচসহ খেলেছেন ১২টি আর সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ১৮টি। তবে এই স্বল্প অভিজ্ঞতাই যে তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফর্ম করার জন্য যথেষ্ট ছিল, সেটা তিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে প্রমাণ করলেন।
পেস, বাউন্স আর সিম মুভমেন্টে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথম ২৫ বলেই নিলেন ৩ উইকেট। বৃষ্টিবিঘ্নিত সিরিজ–নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে জেতালেন দলকে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০৭ সালের পর এটাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়। আর নিজেদের মাটিতে ২৫ বছর পর ইংল্যান্ডকে এই সংস্করণে সিরিজ হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ব্রিজটাউনে এদিন দুই ঘণ্টার বৃষ্টির কারণে ম্যাচ নেমে আসে ৪৩ ওভারে। ম্যাচ শুরুর পর আবার বৃষ্টি হলে খেলা হয় ৪০ ওভার। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে ৪০ ওভারে ইংল্যান্ড তোলে ৯ উইকেট ২০৬ রান। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৪ ওভারে ১৮৮ রান, যা ৪ উইকেট আর ১৪ বল হাতে রেখেই টপকে যায় ক্যারিবীয়রা।
৮ ওভারে ২৯ রানে ৩ উইকেট—এমন স্পেলে ম্যাচের ছন্দ ঠিক করে দেন ফর্ড। এরপর ১৮৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে কিসি কার্টির অর্ধশতক, অলিক অ্যাথানাজের ৪৫ ও রোমারিও শেফার্ডের ২৮ বলে ৪১ রানের ক্যামিওতে জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
টসে হেরে আগে ব্যাট করা ইংল্যান্ড এদিন শুরুতেই বড় ধাক্কা খায়। ৮ রানেই হারায় ওপেনার ফিল সল্ট ও তিন নম্বরে ক্রিজে আসা জ্যাক ক্রলির উইকেট। ৪৫ রানে ফেরেন আরেক ওপেনার উইল জ্যাকস। আগের ম্যাচে অর্ধশতক করে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দেওয়া অধিনায়ক জস বাটলার করেন শূন্য রান। এতে ৯.৪ ওভারে ৪৯ রানেই ৫ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।
সেখান থেকে ইংল্যান্ডকে টেনে তোলেন বেন ডাকেট ও লিয়াম লিভিংস্টোন। গড়েন ৮৮ রানের জুটি। ১৩৭ রানে ব্যক্তিগত ৭১ রানে ডাকেট ও ১৪২ রানে ব্যক্তিগত ৪৫ রানে ফিরে যান লিভিংস্টোন। এরপরও ইংল্যান্ডের রান ২০০ পার হয় শেষ উইকেট জুটিতে ম্যাথু পটস ও গাস আটকিনসন ৩৫ রানের জুটি গড়লে। ম্যাচসেরা ফর্ড, সিরিজসেরা শাই হোপ।
অভিষেক ম্যাচেই ম্যাচসেরা হয়ে ফর্ড বলছেন, ‘পর্দার আড়ালে অনেক কঠিন পরিশ্রম করেছি। ক্যাম্পে কঠিন অনুশীলন করেছি। স্বপ্ন সত্যি হয়েছে, আমার জন্য বিশেষ কিছু। সবাইকে ধন্যবাদ এটা সম্ভব করার জন্য। ঘরের মাঠের দর্শকদের সামনে, মা–বাবার সামনে…এটা হৃদয়গ্রাহী।’
ম্যাচ হেরে হতাশ বাটলার দুষছেন দ্রুত ৫ উইকেট হারানোকে, ‘ব্যাট হাতে কিছু রান কম করেছি। ৪০ রানে ৫ উইকেট হারানো আমাদের বড় ধাক্কা দিয়েছে। মাঠ অনেক ভেজা ছিল, বল হাতে আমরা ভালোই করেছি। স্পিনাররা খেলায় ফিরিয়েছিল। ছেলেদের জন্য দীর্ঘ যাত্রার এটা মাত্র শুরু। আশা করছি, ভবিষ্যতের জন্য কিছু গড়তে পারব।’