চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পূর্ণ হয়েছে। অমর একুশে ফেব্রুয়ারীর ৭০তম বছর কে স্মরণ করতে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকাতে আয়োজিত হয়েছে আহরাম উল হক চৌধুরির ক্যালিগ্রাফির একক প্রদর্শনী “বর্ণে ব্যঞ্জনা”। এই আয়োজনে ৭০টি চিত্রকর্ম প্রদর্শীত হয়েছে। বাংলা ক্যালিগ্রাফির ভিন্নধর্মী এই প্রদর্শনীর উদ্ভোদন হয়েছে ১১ই ফেব্রুয়ারী এবং শেষ হয়েছে আজ।
মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের প্রাচীনতম উদাহরণ হল গুহাচিত্র এবং লেখার উদ্ভাবন মানব সভ্যতাকে তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে। লেখা এবং চিত্রকলাকে একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে ক্যালিগ্রাফি বা শব্দ আঁকার শিল্প।
প্রস্তর যুগ থেকেই গুহার দেয়ালে আঁকাআাঁকির অনেক নজির রয়েছে। লেখাগুলোর অর্থ আমাদের কাছে দুর্বোধ্য হলেও অনেকেই কুশলী মনে করেন, এগুলো কোনো অতীন্দ্রিয় গোপন তাৎপর্য বহন করে। ২১ শে ফেব্রুয়ারির ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত হয়েছে ভিন্নধর্মী একটি প্রদর্শনী।
ক্যালিগ্রাফি বলতে প্রথমত বোঝায় হাতের লেখা সুন্দর করার শিল্প। বর্ণের নিয়মানুগ ব্যবহার, সমন্বয় এবং আনুপাতিক বিন্যাস, যা কখনো কখনো হয়তো দেখে ঠিক ঠাহর করা (বোঝা) যাবে না। বর্ণের আকৃতি ও অবস্থান পড়ে বুঝতে কষ্ট হবে বেশ। কিন্তু তার একটা সহজাত দৃষ্টিনান্দনিকতা থাকবে। দেখার পর যে কোনো ব্যক্তি মাত্রই আখ্যা দেবে রুচিশীল শিল্প বলে।
বাংলা ভাষার রত্নভাণ্ডারগুলোর অন্যতম হলো তার প্রবাদ প্রবচন। আর এই হারিয়ে যাওয়া বচন অনুসন্ধান করে তাকে নানানভাবে পরীক্ষণের মাধ্যমে ছবিতে প্রকাশ করা হয়েছে এই বাংলা ক্যালিগ্রাফি গুলোতে।
দীর্ঘদিনের ধারাবাহিক গবেষণার কাজের সমন্বয় দেখা গিয়েছে এই স্মারক প্রদর্শনীতে। ভাষার মাসে অন্যরকম এই প্রদর্শনী দেখতে এসেছেন অনেক দর্শনার্থী। জানিয়েছেন বিভিন্নরকম প্রতিক্রয়া।
২০০০ সালে গ্যাটে ইনস্টিটিউটে দেশের প্রথম একক বাংলা ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী ছাড়াও আলিয়াঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার ১৯৯৫ সালে নান্দনিক আসবাবের প্রথম একক প্রদর্শনীর মধ্যে থেকে আরহাম চৌধুরীর পথচলার শুরু। এখন পর্যন্ত বেশ কিছু ভিন্ন মাধ্যমের কাজ যেমন: ইস্পাতের ভাস্কর্য, ফোয়ারা ভাস্কর্য, ভেষজ রংয়ের কাজ, দেশীয় গাছের বনসাই এর একাধিক একক প্রদর্শনী আয়োজন হয়েছে বেঙ্গল শিল্পালয়, ব্রিটিশ কাউন্সিল, ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের বাসভবন, দৃক, গুলশান সোসাইটি লেক পার্কসহ বিভিন্ন স্থানে।
অনুপম দাস, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, যমুনা টিভি।