কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের কবুরহাট এলাকায় চলছে তিন দিনব্যাপী গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। ঢাক-ঢোল আর লাঠির তালে তালে নাচা-নাচির মধ্যে খেলোয়াড়দের একে অপরকে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মধ্য দিয়ে চলছে এ লাঠিখেলা।
লাঠিখেলাকে কেন্দ্র করে এলাকায় এক উৎসবের আমেজ চলছে।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) থেকে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) তিন দিনের এ লাঠিখেলা উৎসবের আয়োজন করে ‘আপডেট কুষ্টিয়া’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ পেজ।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) স্থানীয় লাঠিয়াল ওস্তাদ জানার আলী ও ঢুলি রাজা মিয়ার পরিচালনায় দ্বিতীয় দিনের লাঠিখেলায় বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ১২টি দলের ৮২ জন লাঠিয়াল অংশ নেন।
খেলার আয়োজক অর্পণ মাহমুদ জানান, পঞ্চমবারের মতো এ লাঠিখেলার আয়োজন করা হয়েছে। আবহমানকাল ধরে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় একসময় বিনোদনের খোরাক জুগিয়েছে এ লাঠিখেলা। কিন্তু কালের বির্বতণে মানুষ আজ ভুলতে বসেছে এ খেলাটি। তবুও বিনোদনপ্রেমী মানুষের বিনোদনের খোরাক যোগাতেই এ লাঠিখেলার আয়োজন। প্রতিবছর তিন দিনের এ খেলা দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-শিশু ভিড় জমায়। খেলার মাঠ পরিণত হয় এলাকার মানুষের বৃহৎ মিলন মেলায়।
লাঠিখেলার ওস্তাদ জানার আলী জানান, তারা প্রায় ২৩ বছর ধরে বিভিন্ন এলাকায় লাঠিখেলা করে থাকেন। তবে এ খেলার সঙ্গে জড়িতরা প্রায় সবাই গরিব। তারা দুঃখ-দৈন্যে জীবনযাপন করেন। তাদের জন্য সরকারিভাবে কোনো সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা নেই। তেমন কোনো ব্যবস্থা হলে নিয়মিত চর্চা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা এ খেলাকে আরও বড় পরিসরে মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারবেন বলে আশাবাদী।
লাঠিখেলায় আত্মরক্ষার কৌশল অবলম্বনের প্রচেষ্টা সম্বলিত টান টান উত্তেজনাপূর্ণ ও প্রতিপক্ষকে লাঠি দিয়ে ঘায়েল করার এ যেন এক মহাযুদ্ধ। এ কৌশলটিই লাঠিখেলায় দর্শকদের প্রাণে বিনোদনের সঞ্চার করে।
এবারের লাঠিখেলায় কুষ্টিয়াসহ চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহের খেলোয়াড়রা অংশগ্রহণ করে তাদের লাঠির ক্রীড়াকৌশল প্রদর্শন করেন। খেলাটি চলবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত।