বগুড়া: বগুড়ায় করতোয়া নদী নৌকা বাইচে বৈঠার তালে তালে যেন প্রাণ ফিরে পায়। এ সময় নদীর ধারে আনন্দ ও উল্লাসে মেতে উঠেন তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সী নারী-পুরুষ ৷ সেই সঙ্গে শিশুর সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো।
সোমবার (০৯ অক্টোবর) দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতাকে ঘিরে নদীর দুই পাড়ে হাজারও মানুষের ঢল নামে।
নৌকা বাইচ উপলক্ষে সকাল থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে আসতে থাকেন দর্শনার্থীরা। শহরে মালতিনগর এসপি ব্রিজ থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে বেজোড়া ব্রিজ পর্যন্ত নৌকা বাইচ দেখতে স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকেও অনেকে ছুটে আসেন। বাড়িতে জামাই-মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে এক মিলন মেলায় পরিণত হয়। বাড়ির বউ-ঝিয়েরা কাজ শেষ করে নদীর পাড়ে এসে নৌকা বাইচ উপভোগ করেন। অনেকে নদীর তীরে জায়গা না পেয়ে পাশের ভবনের ছাদে নয়তো গাছের ডালে ওঠেন।
এ প্রতিযোগিতায় বগুড়ার গাবতলী, সারিয়াকান্দি ও সোনাতলার আটটি নৌকা অংশ নেয়। পরে চারটি দল উড়ালপঙ্খি, সততা, কিং খান এবং রাখে আল্লা মারে কে সেমিফাইনালে প্রতিযোগিতা করে। পরে উড়ালপঙ্খি বনাম সততার মধ্যে ফাইনাল রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয়। এতে গাবতলী উপজেলার বালিয়াদিঘীর কালাইহাটা গ্রামের উড়ালপঙ্খি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
নৌকা বাইচ দেখতে আসা আসলাম হোসেন, মিনহাজ শেখ, সায়মা মৌ জানান, অনেক দিন পর নৌকা বাইচ খেলা দেখতে এসেছি। করতোয়াকে নদীই মনে হয় না, মনে হয় একটি ড্রেন। কিন্তু আজ করতোয়া নদীকে খুব প্রাণবন্ত লাগছে। আমরা এমন প্রাণবন্ত করতোয়া দেখতে চাই। সবাই মিলে নৌকা বাইচ উপভোগ করেছি, খুব ভালো লাগছে।
শহরের মধ্যে এখন তো তেমন নৌকা বাইচ দেখাই যায় না বলেও মন্তব্য করেন তারা।
তারা বলেন, নৌকা বাইচ উপলক্ষে এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বাড়িতে বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনরা বেড়াতে এসেছে। বাড়ির কাজকর্ম শেষ করে সবাই মিলে নদীর পাড়ে বসে নৌকা বাইচ উপভোগ করছেন তারা।
এক সময় এ নদী দেখার মতো ছিল। সেই নদীটা সবাই মিলে মেরে ফেলছে। আজ আনন্দ উদ্দীপনার সাথে করতোয়া নদীতে নৌকা বাইচ হয়েছে৷ আমরা চাই প্রতিবছর এই করতোয়া নদীতে নৌকা বাইচ হোক৷
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহযোগিতায় ‘নদী বাঁচলে পরিবেশ বাঁচবে’ এই স্লোগানে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু।