যুক্তরাষ্ট্রের দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জে ডি ভ্যান্স ও টিম ওয়ালজ আজ মঙ্গলবার নিউইয়র্কে বিতর্কে মুখোমুখি হচ্ছেন। মধ্য আমেরিকান ভোটারদের মন জয় করতে দুই প্রার্থীর মধ্যে তীব্র কথার লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে চলেছে, তাতে ভোটের ফলাফল নির্ধারণে তাঁদের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের পারফরম্যান্স গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
রিপাবলিকান পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ওহাইওর সিনেটর জে ডি ভ্যান্স ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ ইতিমধ্যে নিজেদের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমিয়ে তুলেছেন। কথাই লড়াইয়েও দুজন বিরোধীদের আক্রমণ করেছেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুরেই ডেমোক্র্যাটদের আক্রমণ করে চলেছেন ৪০ বছর বয়সী ভ্যান্স। তিনি ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রার্থী কমলাকে ‘চাইল্ডলেস ক্যাট লেডি’ বলে আক্রমণ করার পাশাপাশি ‘বিড়ালখাওয়া অভিবাসী’ বলে ভুয়া খবর ছড়ানো ও প্রতিদ্বন্দ্বীর সামরিক রেকর্ড নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
অন্যদিকে সাবেক শিক্ষক ৬০ বছর বয়সী ওয়ালজ যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সুরে ভ্যান্স ও ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছেন। তিনি রিপাবলিকদের ‘অদ্ভুতুড়ে’ বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, তা অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছিল।
তবে এই দুজনের ক্ষেত্রে একটি বিষয়ে মিল রয়েছে। তা হচ্ছে, কমলা ও ট্রাম্প দুজনই চান যে তাঁদের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলের ভোটারদের মন জয় করে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার পথ সুগম করবেন।
বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক থমাস হোয়ালেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা বড় ধরনের নাটক দেখতে চান। আজ মঙ্গলবার তাঁরা টেলিভিশনে তা দেখতে পাবেন। বড় ধরনের পার্থক্য গড়ে দিতে পারে, ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়ে এমন বিতর্ক আগে তেমন দেখা যায়নি।
ভ্যান্স ও ওয়ালজের এই বিতর্কের আয়োজন করেছে সিবিএস নেটওয়ার্ক। আগামী ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এটাই বড় নেতাদের শেষবার মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা হবে।
কমলা হ্যারিসের সঙ্গে দ্বিতীয় বিতর্কে অংশ নেওয়ার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন ট্রাম্প। এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বরের বিতর্কে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জিতেছিলেন বলে বিভিন্ন জরিপে দেখা যায়।
ভ্যান্স ও ওয়ালজের বিতর্কে আরেকটু বেশি মসলা যোগ করতে বিতর্কের সময় দুজনের মাইক্রোফোন চালু রাখা হচ্ছে। এতে একজনের বক্তব্যের মধ্যেই আরেকজন কথা বলতে পারবেন, যা কমলা-ট্রাম্পের বিতর্কের সময় ছিল না।
আজকের এ বিতর্কে ভ্যান্সের ওপর চাপ বেশি থাকবে। ওয়ালজ তাঁকে নারী ও গর্ভপাত নিয়ে বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য আক্রমণ করতে পারেন। এ ছাড়া ভুয়া তথ্য ছড়ানো নিয়েও তাঁকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে। অন্যদিকে ভ্যান্সের পক্ষ থেকে ওয়ালজকে মার্ক্সবাদী হিসেবে আক্রমণ করা হতে পারে।
জরিপে দেখা গেছে, জনপ্রিয় ভোটের হিসাবে ওয়ালজের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন ভ্যান্স। একসময় ভাইস প্রেসিডেন্টের মনোনয়নের দৌগে তাঁর রেটিং ছিল সবচেয়ে কম।
থমাস হোয়ালেন বলেন, ‘ভ্যান্সকে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, আমি মনে করি তাঁর জন্য ফাঁদ পাতা হচ্ছে।’