দেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা ইপিজেডে পোশাকসহ কয়েকটি খাতের ন্যূনতম মাসিক মজুরি ১২ হাজার ৮০০ টাকার সুপারিশ করা হয়েছে। মজুরি বোর্ডের পঞ্চম গ্রেডের হেলপার পদের শ্রমিকরা এ হারে মজুরি পাবেন। সর্বনিম্ন ৫০ শতাংশ শ্রমিকের বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট হবে মূল মজুরির ১০ শতাংশ। বাকিদের ইনক্রিমেন্ট হবে ৫ থেকে ১০ শতাংশ হারে। চলতি মাসেই নতুন মজুরি কাঠামো কার্যকর হচ্ছে।
ফলে ডিসেম্বর থেকেই নতুন কাঠামোয় মজুরি পাবেন শ্রমিকরা। ইপিজেডের নিম্নতম মজুরি বোর্ডের খসড়ায় এ সুপারিশ করা হয়। গত বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। খসড়া সুপারিশের ওপর আপত্তি এবং মতামত চাওয়া হয়েছে মজুরি বোর্ডের পক্ষ থেকে। খসড়া গেজেট প্রকাশের ১৪ দিনের মধ্যেই আপত্তি কিংবা মতামত জানাতে হবে। ইপিজেডে মজুরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কয়েকটি সমজাতীয় পণ্য নিয়ে একটি তপশিল তৈরি করা হয়। তপশিলে ‘ক’ থেকে ‘ঘ’ পর্যন্ত এ রকম চারটি অংশ রয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্প ‘ক’ তপশিলভুক্ত। এ তপশিলের অন্য খাতগুলো হচ্ছে গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজ, জুতা, জুতা অ্যাক্সেসরিজ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, সেবাদানকারী, তাঁবু ও তাঁবু অ্যাক্সেসরিজ, প্লাস্টিক পণ্য, খেলনা ও ক্যাপ অ্যান্ড হ্যাটস।
মাসিক নির্ধারিত মজুরি পদ্ধতির বাইরে পিস রেট বা ফুরন ভিত্তিতেও কাজ করেন শ্রমিকরা। এ রকম ক্ষেত্রে খসড়া গেজেটে বলা হয়, ফুরনভিত্তিক শ্রমিকদের পিস রেট এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে স্বাভাবিক কর্মঘণ্টার জন্য তাদের নিম্নতম মাসিক মজুরি ১৩ হাজার ২৫০ টাকার কম না হয়। ইপিজিডে শিক্ষানবিশ পদ হিসেবে অস্থায়ী শ্রমিকদের জন্য ষষ্ঠ গ্রেড হিসেবেও একটি গ্রেড রয়েছে। সর্বোচ্চ ছয় মাসের শিক্ষানবিশকাল শেষে এ শ্রমিকরা সংশ্লিষ্ট গ্রেডে স্থায়ী শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ পাবেন।
এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য, সফটওয়্যার, লেন্স ও গ্লাস পণ্য, মেটাল ও মেটাল কাস্টিং, অটোমোবাইল ও অটো পার্টস, বাইসাইকেল, ভারী শিল্প, প্রসাধনী, নৌকা, গলফ শ্যাফট, ফিশিং ইকুইপমেন্টস ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য তিনটি নিয়মিত গ্রেডের মধ্যে সর্বনিম্ন গ্রেড জুনিয়র অপারেটর পর্যায়ে ন্যূনতম ১৪ হাজার ২৫ টাকা মজুরি নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান একই সঙ্গে ইপিজেড নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। ১৮ সদস্যের নিম্নতম মজুরি বোর্ডে পাঁচজন করে কারখানা মালিক এবং শ্রমিক প্রতিনিধি রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একজন করে প্রতিনিধি এবং বাকি চারজন বেপজার প্রতিনিধি রয়েছেন।
ইপিজেড শ্রম আইন নামে পৃথক আইনের অধীনে ইপিজেডের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।ইপিজেডের বাইরের পোশাক কারখানায়ও ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয় ১২ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়া বছরে ইনক্রিমেন্ট হবে মূল মজুরির ৫ শতাংশ হারে। গত ২৫ নভেম্বর নতুন কাঠামো চূড়ান্ত করা হয় । চলতি মাস থেকে নতুন কাঠামো কার্যকর হয়েছে।