প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সফল হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সামগ্রিক অর্থে নির্বাচন সফল হয়েছে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, দুর্ঘটনা ও হতাহত হয়েছে। যেগুলো কোনোভাবেই কাম্য নয়। তবুও নির্বাচনের মানদন্ড যদি ভোট প্রদান হয়, তাহলে আমি বলবো দুই ধাপে নির্বাচনে গড়ে ৭৪ শতাংশ ভোট পড়েছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিশেষ সভায় সূচনা বক্তব্যে সিইসি এসব কথা বলেন।
তবে সভার সূচনা বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, আগামী নির্বাচনগুলোতে গোলযোগ-সহিংসতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শক্ত অবস্থান থাকবে। আমরাও আপ্রাণ চেষ্টা চালাবো।
সভার শুরুতে সিইসি বলেন, ‘এবারের ইউপি নির্বাচনে দুই ধাপে ২০টির বেশি দল অংশ নিচ্ছে। আমরা দাবি করছি, প্রতিযোগিতামূলক ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। পরবর্তী নির্বাচনগুলোকে সামনে রেখে আজকের সভায় পর্যালোচনা করবো এবং ভবিষ্যতে আরও সঠিক ও শক্তভাবে কীভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা করা হবে।
মার্চে তফসিল ঘোষণা করা হলেও করোনার কারণে ভোট পেছাতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে নির্বাচন নিয়ে কষ্টের মধ্যে আছি। তারিখগুলো শিফট করতে হচ্ছে। সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছে ইসি সচিবালয়।’
প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে যারা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। যেখানে নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছিল না, সেসব জায়গায় নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
নূরুল হুদা বলেন, ‘আমরা দেখেছি, কোথাও কোথাও মারামারি হয়েছে, খুন-জখম হয়েছে। তারপরেও স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে নির্বাচন চালু রেখেছে। সেই নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিশেষ সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সিইসি। এসময় তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে সহিংসতা রোধে আপ্রাণ চেষ্টা করা হবে। এ লক্ষ্যে আগাম গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছি।
সিইসি বলেন, ‘অনেকে গ্রেফতার হয়েছে। আরও অনেককে গ্রেফতারের তৎপরতা চলছে। এলাকার মাস্তান, যারা বিশৃঙ্খলা করতে পারে তাদের আগাম গ্রেফতারের জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।’
তিনি বলেন ‘এমপি-মন্ত্রীদের অধিকাংশই আচরণবিধি অনুসরণ করেন। দু-চারজন মানছেন না বলে অভিযোগ এসেছে। তাদের চিঠিও দেওয়া হয়েছে এলাকা ছাড়ার জন্য।
‘প্রত্যেকটি ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। আচরণবিধি লংঘন করলে অতীতে মামলা করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আগামীতেও প্রয়োজনে মামলা করা হবে। প্রথম দুই ধাপের ভোটে সহিংসতা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলেন সিইসি।
সভায় চারজন নির্বাচন কমিশনার (ইসি), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, ইসি সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, আনসার ও ভিডিপি, ডিজিএফআই, এনএসআই-এর প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।