ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ ইউক্রেনে রাশিয়ার সংঘাত থেকে মনোযোগ কেড়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এতে রাশিয়ার উদ্দেশ্য হাসিল হচ্ছে বলেও অভিযোগ তার। শনিবার (৪ অক্টোবর) কিয়েভে সফররত ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনের কাছে এমন অভিযোগ জানান জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি বলেন, এটা স্পষ্ট যে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ইউক্রেন থেকে মনোযোগ কেড়ে নিচ্ছে। রাশিয়া ইউক্রেনে মনোযোগ দুর্বল করতে চেয়েছিল। রাশিয়ার সেই লক্ষ্য পূরণ হতে চলেছে। দক্ষিণে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ এখন পর্যন্ত সামান্য অগ্রগতি করেছে। আর রাশিয়া আকাশ নিয়ন্ত্রণ করছে। তাই ইউক্রেনের জরুরিভাবে মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান এবং পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য উন্নত বিমান-বিধ্বংসী প্রতিরক্ষা প্রয়োজন।
জেলেনস্কি এমন সময় এই অভিযোগ প্রকাশ করলেন যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন কংগ্রেসের কাছ থেকে ইউক্রেন ও ইসরায়েলের জন্য ১০৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ চেয়েছে। কিন্তু কয়েকজন রিপাবলিকান নেতা ইউক্রেনকে সহযোগিতার বিরোধিতা করছেন এবং ইসরায়েলের সহযোগিতার প্যাকেজ থেকে এটিকে আলাদা করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণে থাকা রিপাবলিকানদের কাছে ইউক্রেনকে সহযোগিতা বিতর্কিত ইস্যু হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, কিয়েভের যুদ্ধ প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে অনেক বেশি বিনিয়োগ করে ফেলেছে, অথচ অগ্রগতি খুব সামান্য। তারা ইউক্রেনের চেয়ে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসরায়েলকে সহযোগিতায় অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের প্রধান ওলেক্সি ডানিলভ বলেন, আমরা যদি আমাদের যৌথ সহযোগিতা অব্যাহত রাখি তাহলে আমরা জিতব। আপনারা যদি আমাদের ছেড়ে যান তাহলে তা আমাদের জন্য অনেক বেশি কঠিন হবে।
রাশিয়া ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে। ইউক্রেন-রাশিয়ার সেই যুদ্ধ গড়িয়েছে ৬২০তম দিনে। শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমারা অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা দিয়ে ইউক্রেনের পাশে থাকলেও দিনে দিনে তারা সরে যাচ্ছে। অনেকে মনে করছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ স্তিমিত হয়ে এসেছে। কিছু পশ্চিমা দেশ এরইমধ্যে ইউক্রেনকে অস্ত্র-তহবিল দিতে নিমরাজি ভাব দেখিয়েছে।