’আমরা অবশ্যই নেতানিয়হুর বিরুদ্ধে লড়ব, আমরা জিতবই’- সন্তানের লাশ নিয়ে এমন শপথই পাঠ করলেন এক ফিলিস্তিনি বাবা। গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় সন্তান নিহত হয়েছে। তিনি আশ-শিফা হাসপাতালের সন্তানের লাশ নিয়েই এই সংকল্প ব্যক্ত করেন। তার নাম সালামা মারুফ। তিনি গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস সরকারের মিডিয়া অফিসের প্রধান।
তিনি রোববার ক্যামেরার সামনে লাশটি দেখিয়ে চিৎকার করে বলেন, ‘আপনারা যা দেখছেন, সেটাই সত্য।’
তিনি বলেন, “ইসরাইলি নেতারা এই কাজই করছে। তারা এসব লোককে হত্যা করে বলছে যে তারা ‘অবকাঠামোতে’ হামলা করছে। এ মাসুম বাচ্চাটির দিকে দেখুন। সে কি ইসরাইলের প্রতি হুমকি ছিল?’
ইসরাইল শনিবার রাতেও গাজায় ভয়াবহ বোমা হামলা চালায়।
গাজা উপত্যকায় নবজাতকদের জীবন হুমকির মুখে : জাতিসঙ্ঘ
গাজা উপত্যকায় নবজাতকদের জীবন মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। সেখানে ইসরাইলি হামলায় বিভিন্ন হাসপাতাল ও ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়ায় নারীদেরকে অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন রাস্তায় সন্তান প্রসব করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জাতিসঙ্ঘর বেশ কয়েকটি সংস্থা যৌথ বিবৃতি দিয়ে এই কথা জানিয়েছে।
যৌথ বিবৃতি দেওয়া সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে- জাতিসঙ্ঘ শিশু তহবিল, ইউনাইটেড ন্যাশন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফুজিস ইন দ্য নেয়ার ইস্ট, জাতিসঙ্ঘের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রয়োজনীয় পরিচর্যার সুযোগের অভাবে মাতৃমৃত্যু বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’ এদিকে নানা কারণে ‘নবজাতকের জীবনও একটি সুতোয় ঝুলে থাকে। যদি হাসপাতালের প্রয়োজনীয় সামগ্রী শেষ হয়ে যায় তাহলে নিবিড় পরিচর্যা পরিষেবার ওপর নির্ভরশীল প্রায় ১৩০ শিশুর জীবন অকালে হুমকির মুখে পড়বে।’
জাতিসঙ্ঘের ওই সংস্থাগুলো বলেছে, ‘গাজায় প্রায় ৫০ হাজার গর্ভবর্তী নারী রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৮০ জনেরও বেশি প্রতিদিন সন্তান প্রসব করে। এসব নারীর মধ্যে ১৫ শতাংশ গর্ভাবস্থা বা প্রসবজনিত জটিলতার সম্মুখীন হতে পারে এবং তাদের বাড়তি চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গাজা উপত্যকায় ১৪টি হাসপাতাল এবং ৪৫টি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র বন্ধ থাকায় অনেক মহিলাকে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে, তাদের বাড়িতে রাস্তার ধ্বংসস্তুপের মধ্যে বা ঝুঁকির মুখে থাকা স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলোতে সন্তান জন্ম দিতে হচ্ছে। এসব স্থানে প্রয়োজনীয় স্যানিটেশন ও চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। এতে নানা ধরনের জটিলতা বাড়ছে।’
জাতিসঙ্ধ বারবার সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনে তাদের চিকিৎসা সুবিধাগুলো সামর্র্থ্য অনুযায়ী কোনো রকমে চলছে। এক্ষেত্রে একেবারে প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহ ছাড়া গাজা উপত্যকার জনগণকে সাহায্য দেয়া খুব শিগগিরই বন্ধ হয়ে যেতে পারে।