প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের ‘আগাছা-পরগাছা’ আখ্যায়িত করে তাদের বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে দেশবাসীর প্রতিই আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আগাছাকে কি করতে হবে সেটা বাঙালিদের নিজেদেরই ভাবতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বিকেলে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে একথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভেনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা একটা কথা বলতেন- ‘বাংলাদেশের মাটি এত উর্বর এখানে যেমন ফসলও হয় তেমনি সেখানে অনেক পরগাছা-আগাছাও জন্মে। এই আগাছা থাকবে এটা ঠিক। কিন্তু এই আগাছাকে কি করতে হবে সেটা বাঙালিদের নিজেদেরই ভাবতে হবে। কারণ, আমরা আমাদের স্বাধীনতার সুফল বাংলাদেশের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাই। মানুষের জন্য উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে চাই।’
‘শিক্ষা-দীক্ষায়, সংস্কৃতি চর্চায় সবদিক থেকে এই বাঙালি নিজের মর্যাদা নিয়ে স্বমহিমায় স্বগৌরবে বিশ^ দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে-এটাই আমাদের কামনা। ভাষা শহিদ, স্বাধীনতার শহিদ এবং জাতির পিতার প্রতি এটাই আমাদের অঙ্গীকার’, বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদেরই কিছু রয়েছে, যাদের অর্জনটা মনপুতই হয় না। কারণ, পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ থাকতেই তারা পছন্দ করে। এই শ্রেণীটা কখনো আত্মমর্যাদা নিয়ে চলতে জানে না। তারা মর্যাদা বিকিয়ে দিয়েই আত্মতুষ্টি পায়। আর সেই শ্রেণীটা এখনও আমাদের সমাজে রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, সেজন্য যতই আমরা উন্নতি করি, সারা বিশ্ব সেই উন্নয়ন দেখলেও দেশের কিছু মানুষ যেন অন্ধই তাকে তারা কোন উন্নয়ন দেখে না। আর এই অর্জনের কথা বলতে গেলেও তাদের দ্বিধা। এধরনের মানসিকতা কেন, নিজের কাছেই তা অবাক লাগে এবং প্রশ্ন আসে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই বিশ্ব দরবারে মর্যাদা পেয়েছে। আজকে স্বাধীন হয়েছি বলেই যাঁরা ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে সেই রক্তের মর্যাদা তাঁরা পেয়েছেন। কেননা, আজকে ২১শে ফেব্রুয়ারি শুধু আমাদের নয় সারাবিশে^ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কাজেই তাঁদের এই মহান আত্মত্যাগের জন্যই আমাদের এই মহৎ অর্জন সম্ভব হয়েছে। যেটা জাতির পিতা সবসময় বলতেন-‘মহান অর্জনের জন্য মহান আত্মত্যাগ দরকার’।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এই মর্যাদা নিয়েই চলতে হবে।
আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন সংগঠনের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, আব্দুর রহমান এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ. এইচ. এম. খায়রুজ্জামান লিটন, দলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফী।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা শহিদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন হয়।