চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসের রাজস্বের হিসাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে ভ্যাট অনুবিভাগ।
প্রায় ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি করেছে তারা ।
বুধবার (৩০ আগস্ট) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, এই অর্জন এনবিআরের মোট রাজস্বের হিসাবেও ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। হিসাব অনুসারে এনবিআর ভ্যাট, কাস্টমস ও আয়কর মিলে ১৫.৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
এনবিআরের তিন অনুবিভাগের মধ্যে কাস্টমস অনুবিভাগ প্রবৃদ্ধি করেছে ১৩.৭০ শতাংশ এবং আয়কর করেছে ৯.৬৫ শতাংশ। অন্যদিকে ভ্যাট পূর্বের অর্থবছরের তুলনায় ২১.৫১ শতাংশ বেশি আয় করেছে। গত বছরের একই সময়ে ভ্যাটের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১০.৫৮ শতাংশ।
তথ্য অনুযায়ী চলতি জুলাই মাসে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৭,৬৫৪ কোটি টাকা। গতবছরের জুলাইতে এই আদায় ছিল ৬,২৯৯ কোটি টাকা। বেশি আদায় হয়েছে ১,৩৫৫ কোটি টাকা।
জুলাই মাসের ভ্যাট আদায়ে শীর্ষে আছে এলটিইউ ভ্যাট কমিশনারেট। এলটিইউ-র মোট আদায় ৩,৫৬১ কোটি টাকা। পূর্বের তুলনায় যা ৮৬০ কোটি টাকা বেশি। এই কমিশনারেটের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩১.৮৬%। যা সাম্প্রতিক সময়ের ভ্যাট আহরণের রেকর্ড।
এছাড়া, কুমিল্লা, সিলেট, খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, ঢাকা পূর্ব, ঢাকা দক্ষিণ, রংপুর ও যশোর কমিশনারেট চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে তুলনামূলক ভাল করেছে। এদের সবার প্রবৃদ্ধি ডাবল ডিজিটের।
জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি ভ্যাট আহরণ হয়েছে সিগারেট খাতে। এই খাতে মোট আদায় ১,২১১ কোটি টাকা, যা পূর্বের তুলনায় ২৫.৯২% বেশি। অন্যান্য বড় খাত হচ্ছে মোবাইল অপারেটর (+২৮.৪০%), পেট্রোলিয়াম গ্যাস (+১৬০.৭০%), পেট্রোলিয়াম পণ্য (+৩৪.৪৬%), সিরামিক টাইলস (+১৬.১৪%), বাণিজ্যিক ফ্লোর স্পেস (+১৪.১৯%), প্রকিউরমেন্ট সেবা (+২১.৯৫%)।
প্রচেষ্টা নির্ভর খাতেও প্রবৃদ্ধি হয়েছে লক্ষ্যণীয়। এই খাতে আদায় হয়েছে ২৭.৫২%। অন্যদিকে উৎসে কর্তন ক্যাটেগরিতে থেকে ভ্যাট এসেছে ১২.৬৮%।
এক্ষেত্রে মিষ্টির দোকানের ভ্যাট আদায় ২৮ শতাংশ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে মিষ্টি খাতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ হ্রাস করা হয়। তা সত্ত্বেও এই খাতে ভ্যাট আদায় কমেনি, বরং বেড়েছে।
প্রচেষ্টা খাতের এই তথ্যের অর্থ হচ্ছে মাঠ পর্যায়ের ভ্যাট কর্মকর্তাদের তৎপরতা ও তদারকি অনেক বেড়েছে। এনবিআর থেকে বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাত চিহ্ণিত করে বাস্তবসম্মত কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে।
চলতি বছরের জুলাই মাসের ভ্যাট সংগ্রহের এই উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে আশা করা যায়।
উল্লেখ্য অর্থনীতিতে নানারূপ চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরেও ভ্যাট অনুবিভাগ সবচেয়ে বেশি ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি করেছে।