অগ্রবর্তী সময়ের ককপিট
বাংলাদেশ সর্বশেষ

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের যে ফর্মুলা দিল কমিশন

আইনসভা ভেঙে গেলে অন্তর্বর্তী সরকারের সুপারিশ

সংবিধান সংস্কার কমিশন সুপারিশ করেছে যে, আইনসভার মেয়াদ শেষ হলে বা ভেঙে গেলে এবং নতুন নির্বাচিত সরকার শপথ না নেওয়া পর্যন্ত একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে। এই সরকার কারা পরিচালনা করবেন ও কীভাবে কার্যক্রম চলবে, সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

কমিশনের নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক আলী রিয়াজ। অন্যান্য সদস্যরা হলেন—অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইকরামুল হক, সিনিয়র অ্যাডভোকেট ড. শরীফ ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার এম মঈন আলম ফিরোজী, ফিরোজ আহমেদ, মো. মুসতাইন বিল্লাহ, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মো. মাহফুজ আলম ও ছালেহ উদ্দিন সিফাত।

জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি)

রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং বিভিন্ন সংস্থার ভারসাম্য বজায় রাখতে কমিশন একটি জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাব করেছে।

এনসিসি রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হবে। এর সদস্যরা হলেন—রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, বিরোধী দল মনোনীত নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষের ডেপুটি স্পিকার এবং আইনসভার উভয় কক্ষের সদস্যদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত একজন প্রতিনিধি।

আইনসভা ভেঙে গেলে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শপথ না নেওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান এনসিসির সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। আইনসভা না থাকলে এনসিসির সদস্যরা হবেন—রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি ও উপদেষ্টা পরিষদের দুইজন সদস্য।

এনসিসির অন্যতম দায়িত্ব হবে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় নিয়োগের সুপারিশ করা। এর মধ্যে রয়েছে—নির্বাচন কমিশনের প্রধান ও কমিশনারগণ, অ্যাটর্নি জেনারেল, সরকারি কর্মকমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধানসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদ।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব

কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, আইনসভার মেয়াদ শেষ হলে বা তা ভেঙে গেলে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার শপথ না নেওয়া পর্যন্ত একটি অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালিত হবে।

  • এই সরকারের প্রধানকে প্রধান উপদেষ্টা বলা হবে।
  • আইনসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ দিন আগে বা আইনসভা ভেঙে গেলে ১৫ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করতে হবে।
  • প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে সর্বোচ্চ ১৫ সদস্যের একটি উপদেষ্টা পরিষদ থাকবে।
  • অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সর্বোচ্চ ৯০ দিন হবে। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার শপথ নিলেই এই সরকারের কার্যক্রম শেষ হবে।

প্রধান উপদেষ্টার মনোনয়ন প্রক্রিয়া

প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে:

  1. এনসিসির ৯ সদস্যের মধ্যে অন্তত ৭ জনের সম্মতিতে একজন গ্রহণযোগ্য নাগরিককে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত করা হবে।
  2. যদি সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব না হয়, তবে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের মধ্য থেকে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে, যেখানে অন্তত ৬ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন।
  3. তাতেও সিদ্ধান্ত না হলে, এনসিসির সম্মিলিত সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রপতি নিজেই প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেবেন।
  4. যদি এনসিসি সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারে, তবে সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি প্রধান উপদেষ্টা হবেন।
  5. যদি তিনি অনুপস্থিত থাকেন বা দায়িত্ব নিতে অসম্মত হন, তবে পর্যায়ক্রমে তার পূর্ববর্তী অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের বিচারকদের মধ্য থেকে একজনকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে।

এই বিধান নিশ্চিত করবে যে, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব নিরপেক্ষ ও সাংবিধানিকভাবে সঠিকভাবে পরিচালিত হবে।

সম্পর্কিত খবর

চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে ‘প্রচার রাজনীতি’ তুঙ্গে

gmtnews

নিলামে তোলা হবে বিশ্বকাপে মেসির ৬টি জার্সি

Shopnamoy Pronoy

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ৫ লাখ আনসার-ভিডিপি মোতায়েন

gmtnews

মন্তব্য করুণ

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই অপ্ট আউট করতে পারেন। স্বীকার করুন বিস্তারিত