সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী অক্টোবর মাসে মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ এর মতিঝিল অংশ পর্যন্ত উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (১৮ জুন) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডিএমটিসিএল আয়োজিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরটি লাইন-৬ এর পরিচালন বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে সিটি কর্পোরেশনের কিছু কিছু জায়গায় আপত্তি আছে, যেমন হাতিরঝিল। আমরা চিন্তা করছি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তেজগাঁও পর্যন্ত রাখব। পরবর্তী অংশ আমরা আলাপ আলোচনা করে সমাধান করতে পারব। এটাতে চ্যালেঞ্জ আছে। তবে আমি মনে করি এই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা যাবে। কারণ আমাদের সবার আন্তরিকতা আছে।
মেট্রোরেলের পিলারে পোস্টার লাগানোর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, পিলারগুলো শুরুতে যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছিল আমরা ভয় পেয়ে যাচ্ছি। এইটুকু সৌন্দর্যটি আমাদের থাকবে না। রুচিবোধের এতই কি ঘাটতি বাংলাদেশে! যে দেশ আজকে সারা বিশ্বের বিস্ময়, সেই দেশে রুচির এত দারিদ্র কেন? এখানে জরিমানা করে হলেও পোস্টটা লাগানো বন্ধ করতে হবে। এই মেট্রোরেল সারা জাতির সম্পদ। এই জাতীয় সম্পদ রক্ষা করতে সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিরদিন ক্ষমতায় থাকবেন না।
প্রটেকশন গাড়িতে হুটার লাগানো বন্ধ করতে হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি মন্ত্রী আমার প্রটেকশন গাড়িতে কোন হুটারের আওয়াজ শুনবেন না। আমি এটা বন্ধ করে দিয়েছি। আমি হুটার চালাই না। হাসপাতালের সামনে দিয়ে গাড়িগুলো যেভাবে হর্ন বাজায়, তা বন্ধ করতে হবে। আমি দুই মেয়রের উপস্থিতিতেই কথাগুলো বলছি।
রাস্তায় গাড়ি থেকে ময়লা ফেলার বিষয়ে বিআরটিএকে আইন করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, গাড়ি থেকে সিগারেটের শেষ অংশ রাস্তায় ফেলা বা কোনো কিছু খেয়ে রাস্তায় ফেলা বন্ধ করতে হবে। গাড়ি থেকে যত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা যাবে না এবং যত্রতত্র সিগারেট খাওয়া যাবে না। ঢাকা শহরে সিগারেট খাওয়া বন্ধ করুন। দুই মেয়র প্লিজ আপনারা আলাদা জায়গা করে দিন।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তমোহিদে বলেন, আপনাদের এ সেমিনারে উপস্থিত হতে পেরে আনন্দিত। ঢাকা মেট্রো এমআরটি আমাদের সবচেয়ে সফল প্রকল্পগুলোর একটি। এটি বাংলাদেশ-জাপানের পারস্পরিক বিশ্বাস-বন্ধুত্বের এক অনন্য উদাহরণ। ডিএমটিসিএলের প্রকৌশলীরা প্রত্যেক বছর জাপানে যেতে পারবেন, এছাড়া জাইকা থেকে সব ধরনের কারিগরি সহায়তাও অব্যাহত রাখা হবে। আপনাদের মতো ঢাকা আমারও খুব প্রিয় শহর। ঢাকার মতো এত জনবহুল শহরে এরকম প্রকল্প সম্পন্ন করা আসলেই চ্যালেঞ্জিং। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশে জাইকার সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়োমাকি মিনোওরি বলেন, আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরটি লাইন-৬ বাংলাদেশ-জাপানের আরেকটি যৌথ গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। এটি প্রমাণ করে যোগাযোগ খাতে জাপান-বাংলাদেশ কতটা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এটি ঢাকার জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে। জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নে ভবিষ্যতেও সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে এবং উইন-উইন সিচুয়েশনের ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী, ডিএমটিসিএলের ব্যবস্তাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক, ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি শেখ ফজলে নূর তাপস প্রমুখ।