বিএনপি’র আন্দোলন নিয়ে আমাদের কোন মাথা ব্যথা নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
গতকাল বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বন্যা কবলিত অসহায় ও দুস্থ মানুষের মধ্যে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নগদ অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপকমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও কুড়িগ্রাম জেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ১০টি উপজেলার মানুষকে অর্থ সহয়তা দেয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি।
বিএনপির ঈদের পরে আন্দোলনের ঘোষণা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন্দোলন, কীসের আন্দোলন, কবে হয়েছিল আন্দোলন। শুনেছিলাম বহুবার, ডাক দিয়েছিল ঈদের পর, ডাক দিয়েছিল পরীক্ষার পর। এখন আবার ডাক দিচ্ছেন বন্যার পর। দেখতে দেখতে ১৩ বছর। আন্দোলন হবে কোন বছর? দেশের মানুষ জানে তাদের আন্দোলনের ডাক আষাঢ়ে গর্জনের মতো। এ নিয়ে আমাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আপনি এবং আপনার সহকর্মীরা শেখ হাসিনাকে আক্রমণ করে যে ভাষা প্রয়োগ করেন, এটা কোনো ভদ্রলোকের ভাষা নয়। এটা রাস্তার ভাষা। তারা রাস্তার ভাষায় কথা বলে। আমরা রাজনীতির ভাষায় কথা বলি। এটা হলো তাদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস হচ্ছে যে কোনো বিপদে-আপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানো। দেশের যে কোনো দুর্যোগে সবার আগে মানুষের পাশে দাঁড়াতে ছুটে যায় আওয়ামী লীগ। ঝড়বৃষ্টির মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্যাকবলিত সিলেট অঞ্চলে গিয়েছিলেন। আমরা তাদের কিছু বলতে চাই না। আমরা জবাব দেব কাজ দিয়ে।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা ঢাকায় বসে লিপ সার্ভিস দেয়, ভাষণ শিল্পের বিকাশ ঘটায় এবং ঘরে বসে প্রেস ব্রিফিং করে তারাই এ ধরনের কথা বলতে পারে। তারা মানুষের পাশে দাঁড়ায় না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যদিও বা কখনও যায় সেটা হলো নাম মাত্র ফটো সেশনের জন্য। আমরা সবসময় দেখে আসছি, বিএনপি নেতারা এটাই করে। তাদের ত্রাণ কার্যক্রম এক ধরনের ত্রাণ বিলাস। ত্রাণ বিতরণের চেয়ে প্রেস ব্রিফিং ও ফটো সেশনে অধিক মনোযোগী তারা।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, বন্যায় সরকার ৯ হাজার টন চাল, দেড় লক্ষ প্যাকেট শুকনো খাবার, ১১ কোটি টাকা ত্রাণ দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকেও ১ কোটি টাকার অধিক টাকা দেয়া হয়েছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জের স্থানীয় আওয়ামী লীগও যথেষ্ট অর্থ সহয়তা দিয়েছে।
সবাইকে কারোনাভাইরাস নিয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, করোনা বাড়ছে। ঈদের পর আরও বাড়তে পারে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব বাংলাদেশে পড়তে পারে। সারা বিশ্বে এই যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ বন্যায় মানুষকে সহযোগিতা করার ব্যাপারে সিদ্ধহস্ত। শেখ হাসিনা ১৯৯১ সালের বন্যায় উড়ির চরে বিচ্ছিন্ন দ্বীপে নিজে গিয়ে ত্রাণ দিয়েছেন। বন্যাসহ বিপদে-আপদে মানুষকে সহযোগিতা করতেন বলেই মানুষ বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসতো।