অগ্রবর্তী সময়ের ককপিট
বাংলাদেশ সর্বশেষ

তৈরি পোশাকশিল্পে প্রকৃত রপ্তানি আয়ে হঠাৎ বড় লাফ

দেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রকৃত রপ্তানিতে হঠাৎ করে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। সর্বশেষ গত জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে তৈরি পোশাক খাতে প্রকৃত রপ্তানি ছিল মোট রপ্তানির প্রায় ৭১ শতাংশে। গত বছরের একই প্রান্তিকে এ খাতে প্রকৃত রপ্তানি আয় ছিল মোট রপ্তানির সাড়ে ৫১ শতাংশ। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে প্রকৃত রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ২০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

যদিও পোশাক খাতের প্রকৃত আয়ের এ হিসাব নিয়ে খাত–সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সন্দেহ বা প্রশ্ন রয়েছে। খাত–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়, ফলে ক্রেতারা প্রয়োজনীয় নয় এমন পণ্য কেনা কমিয়ে দেন। তাতে কমে যায় পোশাকের বিক্রিও।

আবার গত বছরের শেষ দিকে অধিকাংশ কারখানা ২০-৩০ শতাংশ কম উৎপাদন সক্ষমতায় চলেছে। গ্যাস-বিদ্যুতের কারণে উৎপাদনও কম-বেশি ব্যাহত হয়েছে। তাই এ খাতের প্রকৃত আয়ের তথ্য নিয়ে তারা সন্দিহান।

গত ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক পোশাক খাতের রপ্তানি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষণা বিভাগ এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই–সেপ্টেম্বর) পোশাক খাতের প্রকৃত রপ্তানি বা মূল্য সংযোজন ছিল ৮২২ কোটি মার্কিন ডলারের। পোশাকের মোট রপ্তানি আয় থেকে কাঁচামাল আমদানি বাবদ খরচ বাদ দিয়ে প্রকৃত আয়ের এ হিসাব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পোশাকের যে মূল্য সংযোজন দেখানো হচ্ছে, তা আমার কাছে অস্বাভাবিকই মনে হচ্ছে। কারণ, হঠাৎ এ খাতে এত মূল্য সংযোজনের যৌক্তিক কোনো কারণ দেখছি না। বরং আগের তুলনায় এখন কাপড়সহ অন্যান্য কাঁচামালের আমদানি বেড়েছে।’

অনেকে প্রকৃত রপ্তানি আয়কে পোশাক খাতের মূল্য সংযোজন হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। তবে অর্থনীতিবিদেরা এটিকে মূল্য সংযোজন হিসেবে মানতে নারাজ। তাঁরা বলছেন, পোশাকশল্পে নির্দিষ্ট একটি সময়ে যে পরিমাণ কাঁচামাল আমদানি করা হয়, সেগুলো রপ্তানির ক্ষেত্রে এক বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবহার করা যায়। তাই একটি নির্দিষ্ট সময়ের রপ্তানি আয় থেকে আমদানি ব্যয় বাদ দিয়ে প্রকৃত যে আয় পাওয়া যাবে, সেটিকে প্রকৃত মূল্য সংযোজন বলা যাবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই–সেপ্টেম্বরে পোশাক রপ্তানি বাবদ মোট আয় ছিল ১ হাজার ১৬২ কোটি ডলার। তার বিপরীতে আমদানির পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৩৯ কোটি ডলার। তাতে এ খাতের মোট রপ্তানি আয় দাঁড়ায় ৮২২ কোটি ডলারে, যা এ খাতের মোট আয়ের প্রায় ৭১ শতাংশ। অথচ ২০২২–২৩ অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই–সেপ্টেম্বর) ১ হাজার ২৭ কোটি ডলারের রপ্তানি আয়ের বিপরীতে কাঁচামাল আমদানি বাবদ ব্যয় ছিল ৪৯৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এ খাতে প্রকৃত রপ্তানি আয় ছিল ৫২৯ কোটি ডলার, যা মোট আয়ের সাড়ে ৫১ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের শুরু থেকে পোশাক খাতের প্রকৃত রপ্তানি হঠাৎ করে বেড়ে ৭০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বছরের প্রথম প্রান্তিকে মোট পোশাক রপ্তানি আয়ের ৭১ শতাংশই ছিল প্রকৃত আয়। এপ্রিল–জুন প্রান্তিকে তা বেড়ে হয় সাড়ে ৭১ শতাংশ।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রথম আলোকে বলেন, পোশাক খাতের রপ্তানির বিপরীতে আমদানি যে তথ্য তাতে আমদানি খরচ অনেক কমেছে। কয়েকটি কারণে এটি হতে পারে, প্রথমত পণ্যের চাহিদা কম থাকায় আমদানিও কমতে পারে। দ্বিতীয়ত বিশ্ববাজারে পোশাকের কাঁচামালের দাম কিছুটা কমেছে তাই এ বাবদ খরচ কমে গেছে। তৃতীয় কারণ হতে পারে, ডলার–সংকটের কারণে আমদানি কম হয়েছে। যেহেতু পোশাক খাতে আমদানি করা কাঁচামাল এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার করা যায়, তাই এ সময় রপ্তানিতে খুব বেশি সমস্যা হয়নি।

সম্পর্কিত খবর

খলিলুরের শখের কমলার বাগান দেখে অবাক সবাই

Shopnamoy Pronoy

১২ ঘণ্টায় কক্সবাজার থেকে ঢাকায় উদ্বোধনী ট্রেন

Zayed Nahin

কোপা আমেরিকার ভেন্যু চূড়ান্ত, ফাইনাল মেসির মায়ামিতে

Shopnamoy Pronoy

মন্তব্য করুণ

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই অপ্ট আউট করতে পারেন। স্বীকার করুন বিস্তারিত