ময়মনসিংহ: দুইদিনের টানা বৃষ্টিতে জেলায় ১২ হাজার হেক্টর রোপা আমন ও সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে হাজার হাজার পুকুর ও মাছের ঘের থেকে ভেসে গেছে শত শত কোটি টাকার মাছ।
এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন এই জেলার কয়েক হাজার কৃষক ও মৎস্য চাষি।
তবে শনিবার (৭ অক্টোবর) বিকেল পর্যন্ত এই জেলার মৎস্য চাষিদের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়নের চেষ্টা চলছে।
টানা বৃষ্টির কারণে জেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হওয়া কয়েক হাজার পুকুর ও ঘের থেকে বিপুল পরিমাণ মাছ ভেসে গেছে। এতে পুকুর ও মাছের ঘেরগুলোর অবকাঠামোতেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি, তবে নির্ণয়ের চেষ্টা চলছে।
এদিকে টানা বর্ষণে এই জেলার ১১ হাজার ৪২০ হেক্টর রোপা আমন ধান জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মতিউজ্জামান। সেই সঙ্গে পানির নিচে নিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে ৬৯০ হেক্টর সবজি ফসল।
এই অবস্থায় দ্রুত পানি সরে গেলে কৃষি ফসলের খুব একটা ক্ষতি হবে না বলে জানিয়েছেন এই কৃষি কর্মকর্তা। তবে পানি স্থায়ী হলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলেও জানান তিনি।
সূত্রমতে, র্দীঘ সময় ধরে জেলার ত্রিশাল, ফুলবাড়ীয়া, ভালুকা, গৌরীপুর, সদর, মুক্তাগাছাসহ প্রায় সব কয়টি উপজেলা মৎস্য চাষের জন্য ব্যাপকভাবে পরিচিত। এসব এলাকায় হাজার হাজার পুকুর ও ঘেরে বাণিজিকভাবে চাষ করা হয়েছে মাছ। ফলে টানা বর্ষণে এসব পুকুর ও ঘের পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে শত শত কোটি টাকার মাছ চলে গেছে উন্মুক্ত জলাশয়ে।
এতে মৎস্য চাষিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আশপাশের জলাশয়, ফসলি জমি, নালা, খাল ও বিলে মাছ শিকারের হিড়িক পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষেরা এসব মাছ শিকার করে বিক্রি করছেন হাট-বাজারে।
জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার জোরবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল হামিদ জানান, বৃষ্টির পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ায় আমি জাল ফেলে কয়েক হাজার টাকার মাছ ধরেছি। আমার মত আরও শত শত মানুষ এভাবেই মাছ ধরছে। এতে মৎস্য চাষিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
একই অবস্থা জেলার ১৩টি উপজেলাতেও। এতে মৎস্যচাষিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাফিজার রহমান।
তিনি বলেন, টানা দুইদিনের বৃষ্টিতে জেলার ১৩টি উপজেলাতেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মৎস্যচাষিরা। সেই অনেক ফসলি জমিও পানিতে তলিয়ে গেছে। এই অবস্থায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া চেষ্টা চলছে।