অগ্রবর্তী সময়ের ককপিট
বিশ্ব সর্বশেষ

কমলা হ্যারিস, হোয়েন দ্য স্টারস অ্যালাইন

আমি জ্যোতিষশাস্ত্র মোতাবেক ভাগ্যরেখা কিছুটা পড়তে জানি, কিন্তু তাতে ভরসা করি না। বিশ্বাসও করি না। ইংরেজিতে একটা কথা আছে, হোয়েন দ্য স্টারস অ্যালাইন, সেটা ভাগ্যবিষয়ক নয়। সেটার অর্থ হলো, ঘটনাপ্রবাহ দ্বারা আপনা-আপনি কারও ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়ে যাওয়া। সেরকম একটা ক্ষেত্রই প্রস্তুত হয়েছে ডেমোক্র্যাটদের জন্য। তার ফসল তুলবেন কমলা হ্যারিস, তিন মাস আগেও যাঁর প্রেসিডেন্ট হওয়ার কোনো বাসনাই হয়তো ছিল না।

২০০৮ সালে সবকিছু বারাক ওবামার পক্ষে যাচ্ছিল। নির্বাচনের মাত্র কয়েক দিন আগে ওবামার ৮৬ বছর বয়সী দাদি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এই দাদিই তাঁর রোল মডেল ছিলেন। ওবামা দাদিকে দেখতে গেলেন হাওয়াইতে। ভালো কাভারেজ পেলেন।

দাদি মারা গেলেন নির্বাচনের ঠিক এক দিন আগে। তখন যারা জানত না, তারাও জানল, ওবামার বাবা অভিবাসী কৃষ্ণাঙ্গ মুসলিম, কিন্তু মা মার্কিন শ্বেতাঙ্গিনী খ্রিষ্টান। সেটাও মার্কিন মুলুকে ভোটের ক্ষেত্রে সহায়ক ঘটনা বলে বিশেষজ্ঞরা গণনা করলেন। সেই সময়, নির্বাচনের এক দিন আগে, আমার এক বন্ধু অভিমত দেন, ‘হোয়েন দ্যা স্টারস অ্যালাইন’, অর্থাৎ ওবামা জিতবেই।

এবারও তা–ই হচ্ছে। হ্যারিস জিতবেই বলে মনে হচ্ছে। না, আমার কথা না, যাকে বলা হয় ‘প্রফেট অব প্রেসিডেনশিয়াল ইলেকশন’, যাকে অনেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে নস্ট্রাডমাসের সঙ্গে তুলনা করেন, এটা তাঁর কথা। কিংবদন্তিতুল্য অধ্যাপক এলেন লিখম্যান।

শুক্রবার তিনি তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী দিলেন। জয়ী হবেন কমলা হ্যারিস। এই অধ্যাপকের কাছে কোনো ক্রিস্টাল বল নেই। আছে ১৩টি সংক্ষিপ্ত হ্যাঁ/না উত্তরের প্রশ্ন। এই ১৩টি প্রশ্নের কষ্টিপাথর তিনি নিজে তৈরি করেছেন, ১৯৮১ সালে। সঙ্গে ছিলেন আরেকজন রুশ গবেষক। তারপর ১৯৮৪ থেকে আজ পর্যন্ত শুধু একবার তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী ভুল হয়েছে, ২০০০ সালে। বলেছিলেন, আল গোর জিতবেন, জিতেছেন জর্জ বুশ। বাকি ৯টি নির্বাচনে তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী নির্ভুল। তাই এই দেশটি তাঁর ঘোষণার দিকে তাকিয়ে থাকে।

শুক্রবার আবার এলেন লিখম্যান দৃঢ়তার সঙ্গেই বললেন, হ্যারিস জয়ী হবে। এমনকি দুটি প্রশ্নে যদি হ্যারিস পয়েন্ট না–ও পায়, তবু জিতে যাবেন। সে দুটি প্রশ্ন পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে।

এ ক্ষেত্রে ‘স্টারস অ্যালাইনের’ বিষয়টা আবার বলি। জো বাইডেন প্রতিযোগিতা থেকে সরে যেতে বেশ অনেক দিন সময় নিলেন। কিছুতেই সরে দাঁড়াবেন না। তাতে ডেমোক্র্যাটদের যাঁরা তাঁরা সরে দাঁড়ানোর পক্ষে ছিলেন এবং মনে করছিলেন বয়স ও অসুস্থতার কারণে তাঁর জেতার সম্ভাবনা কম, তাঁরা বিরক্ত হয়েছেন। কারণ সময় নষ্ট হচ্ছে। তাঁরা মনে করেছেন, যিনি নতুন প্রার্থী হবেন তিনি প্রচারণার তেমন কোনো সুযোগই পাবেন না। অথচ এই দেরি করাটাই শেষ পর্যন্ত সুফল বয়ে আনল।

সেই যে জুলাইর ১৩ তারিখে ডোনাল্ড ট্রাম্প আততায়ীর গুলিতে সামান্য আহত হলেন, সেই থেকে তাঁর জনসমর্থন বাড়তে থাকল। সংবাদমাধ্যমের সব মনোযোগ তাঁর দিকে চলে গেল। আর এর পরপরই ডেমোক্র্যাটদের প্রার্থী পরিবর্তন হওয়ার মতো বিরাট ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটল। এতে মুহূর্তেই মনোযোগ ট্রাম্প থেকে হ্যারিসের দিকে চলে এল। ট্রাম্পের হত্যাচেষ্টাজনিত ‘সহানুভূতিসূচক ভোটের’ স্রোতে ভাটা পড়ে গেল। এই ঘটনা দুটি আগে-পরে হয়ে গেলে মনোযোগ ও সমর্থন অন্য রকম হয়ে যেত।
নির্বাচনের ফলাফল আমরা এখনো জানি না। কিন্তু একেই বলে ‘হোয়েন দ্য স্টারস অ্যালাইন।’

সম্পর্কিত খবর

মঙ্গলবার থেকে ৭ জেলায় লকডাউন

News Editor

আজ সশস্ত্র বাহিনী দিবস

gmtnews

ইউক্রেনে রাশিয়ার শস্য চুরির রিপোর্ট বিশ্বাসযোগ্য: ব্লিংকেন

gmtnews

মন্তব্য করুণ

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই অপ্ট আউট করতে পারেন। স্বীকার করুন বিস্তারিত